ইসলামে শ্রম ও শ্রমিকের মর্যাদা এবং অধিকার
পৃথিবীর
দেশে দেশে আজও শ্রমজীবী মানুষ শ্রমের মর্যাদা ও শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য
আন্দোলন করে যাচ্ছে এবং জীবন দিচ্ছে। অথচ ভাবতে অবাক লাগে
আজ থেকে প্রায় সাড়ে চৌদ্দশত বছর পূর্বেই
বিশ্বজনীন জীবনাদর্শ ইসলাম শ্রমের মর্যাদা ও শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত
করেছে কত সুন্দর এবং পরিপূর্ণভাবে।
ইসলামী
অর্থনীতির পরিভাষায়
মানবতার কল্যাণ, নৈতিক উন্নয়ন,
সৃষ্টির সেবা ও
উৎপাদনে নিয়োজিত সকল প্রকার কায়িক ও
মানসিক শক্তিকে শ্রম বলে।
মহান আল্লাহ্পাক মানুষকে
পরিশ্রম করার ক্ষমতা দিয়েছেন। পবিত্র কোরানে মহান আল্লাহ্পাক বলেন, ‘‘ নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভর করে
সৃষ্টি করেছি। (সূরা বালাদ, ৪)।’’ শ্রমই হলো সকল উন্নয়ন ও উৎপাদনের চাবিকাঠি, মহান আল্লাহ্ প্রদত্ত এক অমূল্য সম্পদ। যে
জাতি যত বেশী পরিশ্রমী সে জাতি তত বেশী উন্নত।
শ্রমের
মর্যাদা বর্ণনায় প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘ শ্রমজীবির উপার্জনই উৎকৃষ্টতম, যদি সে সৎ উপার্জনশীল হয়।’’ হাদীসে আছে, প্রিয়
নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘
যে ব্যক্তি নিজের পরিশ্রম দ্বারা জীবিকা
অর্জন করে সে আল্লাহর
বন্ধু।’’ একবার রাসুল (সাঃ)কে
জিজ্ঞাসা করা হল: হে আল্লাহর রাসুল(সাঃ), কোন
ধরণের উপার্জন শ্রেষ্টতর? তিনি
বললেন, নিজের শ্রমলব্ধ উপার্জন।’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘ যে ব্যক্তি নিজের শ্রমের উপর জীবিকা
নির্বাহ করে
তার চেয়ে উত্তম আহার আর কেউ করে না।
জেনে
রাখ, আল্লাহর নবী হযরত
দাউদ (আঃ) নিজের শ্রমলব্ধ উপার্জনে জীবিকা
চালাতেন।’’ হযরত দাউদ (আঃ) এর
কায়িক শ্রমের
কথা পবিত্র কোরান শরীফে উল্লেখ রয়েছে। তিনি নিজ হাতে লোহা দ্বারা বর্ম বানাতেন এবং
সেগুলো বিক্রি করে সংসার চালাতেন।
আমাদের
আদি পিতা হযরত আদম (আঃ)
নিজ হাতে লাঙ্গল দ্বারা জমি কর্ষণ করতেন এবং ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ
করতেন।
আল্লাহর
নবী হযরত নূহ (আঃ) মহাপ্লাবনের পূর্বে আল্লাহর নির্দেশে এক বিশাল জাহাজ নিজ
শ্রমের মাধ্যমে নির্মাণ করেছিলেন। কাষ্ঠনির্মিত এই বিশাল জাহাজের জন্য
তিনি যে কাঠ সংগ্রহ করেছিলেন তা ছিল তাঁর নিজ হাতে লাগানো বৃক্ষের। তিনতলা
এবং বহু কক্ষবিশিষ্ট এই জাহাজটি যখন তিনি কাঠ কেটে এবং হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরী
করতেন তখন তাঁর কওমের মানুষেরা তাঁকে ভীষণ ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতেন এবং তাঁকে
সূত্রধর বলে গালিগালাজ করতো। হযরত নূহ (আঃ) এর জাহাজ নির্মাণের এসব ঘটনা
পবিত্র কোরান শরীফে উল্লেখ আছে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নিজেও পরিশ্রম করে দিন
যাপন করতেন।
একদা নবীজী (সাঃ) তাঁর ফোস্কা পড়া পবিত্র হাত দেখিয়ে সাহাবায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘‘ এটি এমন একটি হাত যা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল(সাঃ) পছন্দ করেন।’’ প্রিয় নবী (সাঃ) আরো বলেন, ‘‘ পৃথিবীতে আল্লাহ্পাক এমন কোন নবী প্রেরণ করেননি যিনি বকরি চড়ান নি। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, আপনিও কি? তিনি বললেন- হ্যাঁ, আমিও কয়েকটা কিরাতের বিনিময়ে মক্কার লোকদের ছাগল চড়াতাম।’’ এমনকি তিনি মসজিদে কুবা নির্মাণে, মসজিদে নববী নির্মাণে, খন্দকের যুদ্ধে খন্দক খননে নিজে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কায়িক শ্রম প্রদান একটি উত্তম এবং সৎকর্ম । কায়িক শ্রম মানুষের মনে যেমন এক অনন্য আনন্দ-বৈভব সৃষ্টি করে তেমনি তা দ্বারা অন্তরে অন্যের উপর নির্ভর না করার দৃঢ় প্রত্যয়ও সঞ্চারিত হয়।
ইসলাম শুধু শ্রমের মর্যাদা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, শ্রম না করে যে সব অলস ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন তাদের ব্যাপারেও কঠোর শাস্তির কথা ঘোষণা করেছে। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘ যে কোন রুজি-রোজগারের জন্য শ্রমের পরিবর্তে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করে সে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উত্থিত হবে যে, তার চেহারায় এক টুকরা গোশতও থাকবে না।’’ অন্যত্র তিনি আরো বলেন, ‘‘ অন্যের নিকট হাত পাতা অপেক্ষা দড়ি নিয়ে জঙ্গলে যাওয়া এবং সেখান হতে কাঁধে জ্বালানি কাঠ বহন করে আনা এবং তা দ্বারা জীবিকা উপার্জন করা উত্তম।’’
একদা নবীজী (সাঃ) তাঁর ফোস্কা পড়া পবিত্র হাত দেখিয়ে সাহাবায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘‘ এটি এমন একটি হাত যা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল(সাঃ) পছন্দ করেন।’’ প্রিয় নবী (সাঃ) আরো বলেন, ‘‘ পৃথিবীতে আল্লাহ্পাক এমন কোন নবী প্রেরণ করেননি যিনি বকরি চড়ান নি। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, আপনিও কি? তিনি বললেন- হ্যাঁ, আমিও কয়েকটা কিরাতের বিনিময়ে মক্কার লোকদের ছাগল চড়াতাম।’’ এমনকি তিনি মসজিদে কুবা নির্মাণে, মসজিদে নববী নির্মাণে, খন্দকের যুদ্ধে খন্দক খননে নিজে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কায়িক শ্রম প্রদান একটি উত্তম এবং সৎকর্ম । কায়িক শ্রম মানুষের মনে যেমন এক অনন্য আনন্দ-বৈভব সৃষ্টি করে তেমনি তা দ্বারা অন্তরে অন্যের উপর নির্ভর না করার দৃঢ় প্রত্যয়ও সঞ্চারিত হয়।
ইসলাম শুধু শ্রমের মর্যাদা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, শ্রম না করে যে সব অলস ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন তাদের ব্যাপারেও কঠোর শাস্তির কথা ঘোষণা করেছে। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘ যে কোন রুজি-রোজগারের জন্য শ্রমের পরিবর্তে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করে সে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উত্থিত হবে যে, তার চেহারায় এক টুকরা গোশতও থাকবে না।’’ অন্যত্র তিনি আরো বলেন, ‘‘ অন্যের নিকট হাত পাতা অপেক্ষা দড়ি নিয়ে জঙ্গলে যাওয়া এবং সেখান হতে কাঁধে জ্বালানি কাঠ বহন করে আনা এবং তা দ্বারা জীবিকা উপার্জন করা উত্তম।’’
মহানবী
(সা.) বলেছেন, “ফরজ
ইবাদতের পর হালাল রুজি অর্জন করা একটি ফরজ ইবাদত।” (বায়হাকী) ইসলাম
শ্রমিকদের ব্যাপারে তাদের নিয়োগকর্তাদের অত্যন্ত ন্যায়ভিত্তিক, সহানুভূতিপূর্ণ এবং সৌভ্রাতৃত্বমূলক
সম্পর্ক বজায় রাখার তাগিদ দিয়েছে বার বার। শ্রমিক নির্যাতন নৈতিক, ধর্মীয় এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য
নয়। ইসলাম এ ব্যাপারে মানুষকে বারবার অত্যন্ত কঠোরভাবে সর্তক করে দিয়েছে যেন
প্রত্যেকে নিজ নিজ অধীনস্থদের সাথে ভালো ব্যবহার করে এবং তাদের উপর কোন প্রকার
যুলুম-নির্যাতন না করে। পবিত্র কোরানের সূরা নিছার ৩৬নং আয়াতে মহান
আল্লাহ্পাক আদেশ দিয়েছেন ঃ “ তোমরা আল্লাহর
ইবাদত কর, তাঁর সাথে আর কাউকে
অংশীদার সাব্যস্ত করো না, পিতা-মাতার সাথে
সৎ ও সদয় ব্যবহার করো, আত্মীয়-স্বজন,
এতিম, দরিদ্র, নিকট
প্রতিবেশী, দূরের প্রতিবেশী,
ভ্রমনের সহযাত্রী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাসদাসীর সাথে সদয়
আচরণ করো। নিশ্চয় আল্লাহ্ দাম্ভিক, গর্বিত ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না।’’
প্রিয়নবী (সাঃ) ইন্তেকালের পূর্ব
মুহুর্তেও অসুস্থাবস্থায় নামাজ এবং অধীনস্থ কর্মচারীদের (দাসদাসীদের) সাথে
সদয় আচরণের জন্য তাগিদ দিয়ে বলেছেনঃ “তোমরা নামাজ এবং অধীনস্থ দাসদাসীদের বিষয়ে আল্লাহকে
ভয় কর।’’ বুখারী
শরীফ
এবং
মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদিসে প্রিয় নবী (সাঃ) বলেছেনঃ “ তোমাদের চাকর, নকর
বা দাসদাসী প্রকৃত পক্ষে তোমাদের ভাই। আল্লাহ্ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন। কাজেই
আল্লাহ্ যার ভাইকে অধীনস্থ করে দিয়েছেন তার উচিত তাকে তাই খাওয়ানো যা সে নিজে
খায় এবং তাকে তাই পরানো যা সে নিজে পরে। দাসদাসীকে এমন কর্মভার দিবে না যা
তার সাধ্যাতীত। যদি কখনো তার উপর অধিক কর্মভার চাপানো হয় তবে যেন তার
প্রতি সাহায্যের হাত প্রসারিত করা হয়।”
শ্রমিকের
মর্যাদা ও অধিকার প্রশ্নে প্রিয় নবী (সাঃ) এর এই বাণীগুলো এক কথায় অনন্য। এতে
শ্রমিককে মালিকের ভাইয়ের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। সাথে সাথে তাদের খোরপোশসহ মালিকের সমমানের স্বচ্ছল
জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে এ হলো শ্রমিকের
ন্যায্য অধিকার এবং এ অধিকার থেকে তাকে কখনো বঞ্চিত করা যাবে না।
অপর এক হাদিসে বলা হয়েছে “ অধীনস্থদের সাথে সদয় আচরণ কল্যাণকর অদৃষ্টের উৎপত্তিস্থল আর তাদের সাথে দুর্ব্যবহার দুর্ভাগ্যের উৎপত্তিস্থল। মালিকপক্ষের অভদ্র আচরণকে ঘৃণা করে প্রিয়নবী (সাঃ) আরো বলেন, ‘‘ অধীনস্থদের সাথে দুর্ব্যবহারকারী জান্নাতে যেতে পারবে না।” ইসলাম শ্রমিকদের ব্যাপারে মালিকপক্ষকে অত্যন্ত দয়ালু এবং সহনশীল হতে শিক্ষা দেয় এবং শ্রমিকদের দোষত্রুটি বার বার ক্ষমা করে দিতে উৎসাহিত করে। আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত হাদীসে প্রিয়নবী (সাঃ) একজন প্রাপ্ত বয়স্ক চাকরের অপরাধ দৈনিক কমপক্ষে সত্তরবার ক্ষমা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ ‘‘ পৃথিবীতে যারা মানুষকে নির্যাতন করে, আল্লাহ্ পাক তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেবেন।” অপর এক হাদীসে প্রিয় নবী (সাঃ) বলেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে বেত্রাঘাত করবে কেয়ামতের দিন তার প্রতিশোধ নেয়া হবে।’’ হযরত আনাস (রাঃ) ছিলেন রসূল (সাঃ) এর কিশোর খাদেম। তিনি বলেন, আমি দশ বছর রাসূল (সাঃ) এর খেদমতে ছিলাম। কিন্তু একদিনের জন্যও তিনি কখনো আমার উপর রাগ করেননি কিংবা কোন প্রকার দুর্ব্যবহার করেননি।
অপর এক হাদিসে বলা হয়েছে “ অধীনস্থদের সাথে সদয় আচরণ কল্যাণকর অদৃষ্টের উৎপত্তিস্থল আর তাদের সাথে দুর্ব্যবহার দুর্ভাগ্যের উৎপত্তিস্থল। মালিকপক্ষের অভদ্র আচরণকে ঘৃণা করে প্রিয়নবী (সাঃ) আরো বলেন, ‘‘ অধীনস্থদের সাথে দুর্ব্যবহারকারী জান্নাতে যেতে পারবে না।” ইসলাম শ্রমিকদের ব্যাপারে মালিকপক্ষকে অত্যন্ত দয়ালু এবং সহনশীল হতে শিক্ষা দেয় এবং শ্রমিকদের দোষত্রুটি বার বার ক্ষমা করে দিতে উৎসাহিত করে। আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত হাদীসে প্রিয়নবী (সাঃ) একজন প্রাপ্ত বয়স্ক চাকরের অপরাধ দৈনিক কমপক্ষে সত্তরবার ক্ষমা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ ‘‘ পৃথিবীতে যারা মানুষকে নির্যাতন করে, আল্লাহ্ পাক তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেবেন।” অপর এক হাদীসে প্রিয় নবী (সাঃ) বলেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে বেত্রাঘাত করবে কেয়ামতের দিন তার প্রতিশোধ নেয়া হবে।’’ হযরত আনাস (রাঃ) ছিলেন রসূল (সাঃ) এর কিশোর খাদেম। তিনি বলেন, আমি দশ বছর রাসূল (সাঃ) এর খেদমতে ছিলাম। কিন্তু একদিনের জন্যও তিনি কখনো আমার উপর রাগ করেননি কিংবা কোন প্রকার দুর্ব্যবহার করেননি।
ইসলাম
শুধু শ্রমিকদের সাথে দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তা নয়, বরং তাদের ন্যায্য পাওনাটুকুও যথাযথভাবে
বুঝিয়ে দেয়ার
তাগিদ দিয়েছে বার বার। মালিক যখন শ্রমিককে দিয়ে কোন কাজ করায় অথচ তাকে তার উপযুক্ত
পাওনা দেয় না এবং তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, সেই মালিক সর্ম্পকে প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘কাল কিয়ামতের দিন তিনি নিজেই শ্রমিকের
পক্ষে বাদী হয়ে আসামী হিসেবে তাকে হাজির
করাবেন মহান আল্লাহর দরবারে।’’ শ্রমিকের
মজুরীর ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘‘ তোমরা শ্রমিককে তার ঘাম শুকানোর আগেই প্রাপ্য পারিশ্রমিক দিয়ে
দাও।’’ শ্রম দেয়ার পাশাপাশি
শ্রমিকের কাজের
অবকাশ বা ছুটি পাওয়ার বিষয়টাও ইসলাম শ্রমিকের অধিকার হিসেবে বিবেচনা করে।
মহান
আল্লাহ্পাক বলেন, ‘‘আল্লাহ্
তোমদের প্রতি সহজতা ও নম্রতা আরোপ করতে চান , কঠোরতা ও কঠিনতা আরোপ করতে ইচ্ছুক নন। (সূরা বাকারাহ, ১৮৫)।’’
অন্যত্র
বলেন, ‘‘আল্লাহ্ কারো উপরই
সাধ্যের অতীত কোন কাজের দায়িত্ব চাপান না।(সূরা বাকারাহ্, ২৮৬)। মহান আল্লাহ্পাক আরো বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই কষ্ট-কঠোরতার সাথে সাথেই রয়েছে শিথিলতা
ও সহজতা এবং নিশ্চয় কষ্ট ও কঠোরতার সাথে সাথেই সহজতা ও সুখ আসবেই। (সূরা আলাম নাশরাহ্, ৫-৬)।
কাজেই
ইসলামের দৃষ্টিতে
একাধারে বিশ্রামহীনভাবে শ্রমিককে কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না। তাকে অবশ্যই আরাম ও
বিশ্রামের জন্য ছুটি দিতে হবে। এ ব্যাপারে রাসূলে করিম (সাঃ) বলেন, ‘‘ লোকদেরকে
সহজতা দাও, কঠোরতার মধ্যে
নিক্ষেপ করো না।’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ দয়ার্দ্রতা
ভালোবাসেন সমস্ত কাজে। কাজেই যে লোক এই দয়ার্দ্রতা নিষিদ্ধ করবে, সে সমস্ত কল্যাণকেই নিষিদ্ধ করবে।’’
শ্রমিকের অধিকারের পাশাপাশি ইসলাম দায়িত্ব ও কর্তব্যের ব্যাপারে শ্রমিকদেরও কঠোরভাবে সর্তক করে দিয়েছে যেন পরম নিষ্ঠা ও সততার সাথে শ্রমিক তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পন্ন করে।। শ্রমিকদের সর্ম্পকে মহান আল্লাহ্পাক বলেছেন,‘‘সর্বোত্তম শ্রমিক সেই যে শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল হয়।’’ এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, প্রিয় নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘ তোমাদের মধ্যে কেহ যখন কোন শ্রমের কাজ করবে তখন তা নিখুঁত ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করবে। ইহাই আল্লাহ্তায়ালা ভালোবাসেন। ’’ শ্রমিক মালিকের যে কারখানায় কাজ করে সে কারখানার সকল যন্ত্রপাতি, সম্পদ, কাগজপত্র, হিসাব-নিকাশ সবই তার আমানত। তাই সে যদি মালিকের সম্পদে অগ্নিসংযোগ করে কিংবা ভাংচুর বা অন্য কোনভাবে বিনষ্ট করে তবে তা হবে আমানতের খেয়ানত । মহান আল্লাহ্তায়ালা বলেন, ‘‘যে লোক বিশ্বাস ভঙ্গ করে নিশ্চয় আল্লাহ্ তাকে ভালোবাসেন না। (সূরা নিসা, ১০৭)।’’ আর আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘‘ যার মধ্যে আমানতদারী নেই তার মধ্যে ঈমানও নেই।’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘ তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই স্ব স্ব দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। কর্মচারি তার মনিবের মালের জন্য দায়িত্বশীল এবং সেজন্য তাকে জবাব দিহি করতে হবে।’’
ইসলামের অন্তর্নিহিত রূপ এবং গুণ এই যে, ইসলাম শুধু অসহায় শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনে কাঁদেনি, তাদের অবস্থা উন্নয়নে শুধু আশ্বাস বাণীই শোনায়নি বরং অত্যন্ত সর্তকতার সাথে কার্যকরভাবে শ্রম ও শ্রমজীবি মানুষের মর্যাদা ও অধিকার সংরক্ষণ করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ, সংঘাত ও শ্রেণী সংগ্রামের সম্পর্ক নয়। এ সম্পর্ক ভ্রাতৃত্বের, পারস্পরিক সহযোগিতার এবং একই কাজে সমান অংশীদারিত্বের। মালিক পুঁজি দিচ্ছে আর শ্রমিক শ্রম দিচ্ছে। অতএব ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক মালিকের গোলাম বা ভৃত্য নয় বরং ভাই ও সাহায্যকারী। এভাবে ইসলাম শ্রম ও শ্রমিকের মর্যাদা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে বহুকাল পূর্বেই। ইসলাম শ্রম ও শ্রমিককে যে মর্যাদা ও অধিকার দিয়েছে তা হৃদ্যতা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে সমুন্নত। তাই ইসলামের দেখানো পথে চলে বর্তমানে দেশে দেশে বিরাজমান শ্রমিক অসন্তোষ দূর করা সম্ভব বলে মনে করি।
আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সকলকে আমল করান
তাওফিক দান করুন, আমীন ।শ্রমিকের অধিকারের পাশাপাশি ইসলাম দায়িত্ব ও কর্তব্যের ব্যাপারে শ্রমিকদেরও কঠোরভাবে সর্তক করে দিয়েছে যেন পরম নিষ্ঠা ও সততার সাথে শ্রমিক তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পন্ন করে।। শ্রমিকদের সর্ম্পকে মহান আল্লাহ্পাক বলেছেন,‘‘সর্বোত্তম শ্রমিক সেই যে শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল হয়।’’ এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, প্রিয় নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘ তোমাদের মধ্যে কেহ যখন কোন শ্রমের কাজ করবে তখন তা নিখুঁত ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করবে। ইহাই আল্লাহ্তায়ালা ভালোবাসেন। ’’ শ্রমিক মালিকের যে কারখানায় কাজ করে সে কারখানার সকল যন্ত্রপাতি, সম্পদ, কাগজপত্র, হিসাব-নিকাশ সবই তার আমানত। তাই সে যদি মালিকের সম্পদে অগ্নিসংযোগ করে কিংবা ভাংচুর বা অন্য কোনভাবে বিনষ্ট করে তবে তা হবে আমানতের খেয়ানত । মহান আল্লাহ্তায়ালা বলেন, ‘‘যে লোক বিশ্বাস ভঙ্গ করে নিশ্চয় আল্লাহ্ তাকে ভালোবাসেন না। (সূরা নিসা, ১০৭)।’’ আর আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘‘ যার মধ্যে আমানতদারী নেই তার মধ্যে ঈমানও নেই।’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘ তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই স্ব স্ব দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। কর্মচারি তার মনিবের মালের জন্য দায়িত্বশীল এবং সেজন্য তাকে জবাব দিহি করতে হবে।’’
ইসলামের অন্তর্নিহিত রূপ এবং গুণ এই যে, ইসলাম শুধু অসহায় শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনে কাঁদেনি, তাদের অবস্থা উন্নয়নে শুধু আশ্বাস বাণীই শোনায়নি বরং অত্যন্ত সর্তকতার সাথে কার্যকরভাবে শ্রম ও শ্রমজীবি মানুষের মর্যাদা ও অধিকার সংরক্ষণ করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ, সংঘাত ও শ্রেণী সংগ্রামের সম্পর্ক নয়। এ সম্পর্ক ভ্রাতৃত্বের, পারস্পরিক সহযোগিতার এবং একই কাজে সমান অংশীদারিত্বের। মালিক পুঁজি দিচ্ছে আর শ্রমিক শ্রম দিচ্ছে। অতএব ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক মালিকের গোলাম বা ভৃত্য নয় বরং ভাই ও সাহায্যকারী। এভাবে ইসলাম শ্রম ও শ্রমিকের মর্যাদা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে বহুকাল পূর্বেই। ইসলাম শ্রম ও শ্রমিককে যে মর্যাদা ও অধিকার দিয়েছে তা হৃদ্যতা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে সমুন্নত। তাই ইসলামের দেখানো পথে চলে বর্তমানে দেশে দেশে বিরাজমান শ্রমিক অসন্তোষ দূর করা সম্ভব বলে মনে করি।


Islam values the dignity and rights of all workers, urging fairness, timely wages, and compassion. Reading surah kahf in roman english reminds us to stay patient, responsible, and sincere in our efforts, trusting that Allah rewards every honest deed.
ReplyDelete