Header Ads

ইসলামী শরীয়াহ মতে ইংরেজী নববর্ষ  

(থার্টিফাস্ট নাইট)





বছর শেষ হওয়া (৩১ ডিসেম্বর) বা নতুন বছর(১ জানুয়ারি) স্বাগতম জানানোর জন্যই মূলত Thirty First night/New year পালন করা হয়।

বর্তমানে প্রচলিত ক্যালেন্ডারটি কে মূলত গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী বলে।আসুন গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জীর ইতিহাস জানি।

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী/পাশ্চাত্য বর্ষপঞ্জী/খ্রিস্টীয় বর্ষপঞ্জী হল আন্তর্জাতিকভাবে প্রায় সর্বস্বীকৃত বর্ষপঞ্জী।১৫৮২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগোরির এক আদেশ অনুসারে এই বর্ষপঞ্জীর প্রচলন ঘটে।সেই বছর কিছু মুষ্টিমেয় রোমান ক্যাথলিক দেশ গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী গ্রহন করে ও পরবর্তীকালে ক্রমশ অন্যান্য দেশসমূহে ও এটি গৃহীত হয়। 
গ্রেগোরিয়ান বর্ষপঞ্জীর সংস্কার দুটি ভাগে বিভক্ত।
১.পূর্ববর্তী জুলিয়ান বর্ষপঞ্জীর সংস্কার
.ইস্টারের তারিখ নির্ণয়ের জন্য গির্জায় ব্যবহৃত চান্দ্র পঞ্জিকার সংস্কার।   
আমরা আজ যে বছর কে বিদায় বা স্বাগতম জানাচ্ছি তা  সংস্কার করার অন্যতম কারণ ছিল ইস্টার(অমুসলিমদের উৎসব) কে সঠিক সময়ে আনার জন্য।রোমানরা ১লা জানুয়ারি উৎসর্গ করে প্রাচীন রোমান ধর্ম অনুযায়ী প্রারম্ভের ও রুপান্তরের ঈশ্বর হিসেবে খ্যাত জানুসকে।জানুস(Janus) নামানুসারে বছরের প্রথম মাসকে জানুয়ারি নামকরণ করা হয়।


Thirty First night/New Year কিছু কুফলঃ

১. কাফিরদের অনুসরণঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী:
যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সামঞ্জস্য রাখল সে তাদের অন্তর্ভুক্ত।”-[আবুদাউদ: (৩৫১৪)]


 কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
যে কোন কওমের সাথে সামঞ্জস্য রাখল, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত।”-[আবুদাউদ: (৩৫১৪), আহমদ: (৫১০৬), ইকতিদাউস সিরাতুল মুস্তাকিম: (/২৪০)ফাতহুলবারি: (১১/৪৪৩)] 

এ প্রসঙ্গে ইব্ন তাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন:
এ হাদিসের সর্বনিম্ন দাবি তাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা হারাম, যদি ও হাদিসের বাহ্যিক অর্থের দাবি কুফরি।”-[আলফুরু: (/৩৪৮)]

ইব্নুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন:
এর রহস্য বাহ্যিক সাদৃশ্য মানুষ কেনিয়ত ও আমলের সাদৃশ্যের দিকে ধাবিত করে। [ইলামুলমুয়াক্কিয়িন: (/১০৭)]

তিনি আরো বলেন:
কিতাবি ও অন্য কাফেরদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা থেকে একাধিক জায়গায় নিষেধাজ্ঞা এসেছে, কারণ বাহ্যিক সামঞ্জস্য আভ্যন্তরীণ সামঞ্জস্যের দিকে ধাবিত করে, যখন আদর্শের সাথে আদর্শ মিলে যায়, তখনঅন্তরের সাথে অন্তর মিলে যায়।”-[ইগাসাতুললাহফান] 

আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিচ্ছেন:
হে মুমিনগণ, তোমরা ইসলামে পূর্ণরূপে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করোনানিশ্চয় সে তোমাদের জন্য স্পষ্ট শত্রু।”-[সূরা বাকারা: ২০৮]

২. অশ্লীলতার প্রসারঃ
আজ উৎসবের নামে অশ্লীলতার প্রসার হচ্ছে। বেপর্দা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, মাদকতা ও অপরাধ একসূত্রে বাধা।অনন্যা অপরাধ ও অশ্লীলতার মধ্যে পার্থক্য হল কোন একটি উপলক্ষে একবার এর মধ্যে নিপতিত হলে সাধারণভাবে যুবক-যুবতী , কিশোর কিশোরী আর এ থেকে বেরোতে পারে না। বরং আরও বেশী পাপ ও অপরাধে নিপতিত হতে থাকে।কাজেই নিজে,নিজের পরিজন ও সন্তানদেরকে সকল অশ্লীলতা থেকে রক্ষা করুন।

আল্লাহ বলেছেনঃ
তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর,যার উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফেরেশতাগন, তারা আল্লাহ যা নির্দেশ দেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হন না।আর তাদের যা নির্দেশ দেয়া হয় তা-ই তামিল হয়।” (সুরাহ আত- তাহরীমঃ ০৬)

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তোমাদের  প্রত্যেক কেই তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, রাষ্ট্র নেতা তার প্রজাদের সম্পর্কে, একজন পুরুষলোককে তার পরিবারের ব্যাপারে,একজন মহিলাকে তার স্বামীর সার্বিক ব্যাপারে, একজন পরিচালক তার মালিকের সম্পদের রক্ষক,আর তাকে সেটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে।“ (বুখারি-৮৯৩,মুসলিম-১৮২৯)

এছাড়াও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বারংবার বলেছেনঃ
তিন ব্যক্তির জন্য আল্লাহ জান্নাত হারাম করেছেন,তারা হল মাদকাসক্ত, পিতামাতার অবাধ্য ও দাইউস, যে তার পরিবারে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়। (মুসনাদে আহমাদঃ ২/৬৯)

এখানে দাইউসবলতে বোঝানো হয়েছে, যে ব্যক্তি তার স্রী-সন্তানদের বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয়।
নিজকে ও নিজের পরিবার পরিজনকে রক্ষা করার পাশাপাশি মুমিনের দায়িত্ব হল সমাজের মানুষদেরকে সাধ্যমত উদ্বুদ্ধ করা।
অশ্লীলতার প্রসারের ব্যাপারে আল্লাহর ভয়ংকর শাস্তির কথা শুনুনঃ
যারা চায় যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রচার ঘটুক তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।" (সুরাহ নুরঃ ১৯)

৩. মুসলিমদের উৎসবের দিনঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন তাদের দুটিদিন ছিল, যেখানে তারা খেলা-ধুলা করততিনি বললেন: এ দুটি দিন কি? তারা বলল: আমরা এতে জাহিলি যুগে খেলা-ধুলা করতাম

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম বললেন:

 নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তার পরিবর্তে তার চেয়ে উত্তম দুটি দিন দিয়েছেন:ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদহা ।”-[আবুদাউদ: (১১৩৪), আহমদ: (১৩২১০), হাকেম: (১১২৪)বুলুগুল মারাম: (৯৩), ফাতহুলবারি: (/১১৩)]

ইব্ন তাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন:
 এ হাদিস প্রমাণ করে কাফেরদের উৎসব পালন করা হারামকারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের জাহিলি দুই ঈদের উপর বহাল রাখেননিরীতি মোতাবেক তাতে খেলাধুলার অনুমতি দেননিতিনি বলেছেন: নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে পরিবর্তন করে দিয়েছেনএরদাবি পূর্বের আমল ত্যাগ করাকারণ বদল করার পর উভয় বস্তুকে জমা করা যায় নাবদল শব্দের অর্থ একটি ত্যাগ করে অপরটি গ্রহণ করা।”[ফায়দুলকাদির: (/৫১১)]
অতএব কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয় ইহুদি, খৃস্টান ও মুশরিকদের উৎসব পালন করা, যেমন নববর্ষ ও অন্যান্য উৎসবসমূহ
একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরন করা 

হে আল্লাহ্‌!! আমাদেরকে সরল পথ দেখান,সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে আপনি নেয়ামত দান করেছেনতাদের পথ নয়, যাদের প্রতি আপনার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে

No comments

Comments System

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.